Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

অনুপ্রবেশকারী নিয়ে চিন্তিত আ.লীগ!

জুলাই ১৭, ২০২০, ০৭:৫৯ পিএম


অনুপ্রবেশকারী নিয়ে চিন্তিত আ.লীগ!

অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রিড নেতাদের নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ। তাদের একের পর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ঘরের রাজনীতিতে প্রশ্নবিদ্ধ ক্ষমতাসীন দলটি। তাই দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড, ভিন্নপন্থি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকা নেতাকর্মীদের যেকোনো মূল্যে দল থেকে ছাঁটাই করতে চান দলটির দায়িত্বশীল নেতারা।

তারা বলছেন, ক্ষমতার লোভে যারা আ.লীগে প্রবেশ করে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। এ জন্য জেলা-উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে দৈনিক আমার সংবাদের সাথে কথা বলেছেন খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের পাঁচ সাংগঠনিক সম্পাদক। তাদের সাথে কথা বলে লিখেছেন আমার সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক রফিকুল ইসলাম

সুবিধালোভীদের কোনো নীতি আদর্শ নেই: বি এম মোজাম্মেল হক
দলীয় লেবাস ব্যবহার করে যারা বিভিন্ন অপকর্ম করে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেছেন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদ কবি এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে ভিন্নপন্থি, সুবিধাবাদী ও রাজনীতির আগাছারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য ক্ষমতাসীন দলের ওপর ভর করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এদের কোনো নীতি-আদর্শ নেই। তাদের কাজ শুধু মানুষের চরিত্রহনন করা। এই সকল দুষ্কৃতকারীদের স্থান আ.লীগে হবে না। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

অপকর্মকারীকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না: এস এম কামাল হোসেন
আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, আ.লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীসহ সারা দেশেই একের পর এক মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস এবং দলীয় নেতাকর্মীদের অনিয়ম ও অপকর্মের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। আ.লীগের অভ্যন্তরেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশনায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার লোভে যারা আ.লীগে প্রবেশ করে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। এ জন্য জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, সুবিধাবাদি, সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ পেলেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ জন্য সব সময় খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।

হাইব্রিডদের দল থেকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে: মির্জা আজম
আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, আ.লীগে এক শ্রেণির নেতা আছে। যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য টাকা-পয়সার মাধ্যমে ভিন্নপন্থিদের দলের প্রবেশ করিয়েছে এবং বিভিন্ন পদ-পদবিতেও বসিয়ে দিয়েছে। তারাও পদ পেয়ে নিজেদের স্বার্থে হাসিলের জন্য বিভিন্ন বিতর্কমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হয়ে সরকার ও আ.লীগের দীর্ঘ দিনের অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। এই সকল হাইব্রিড-কাউয়াদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদেরকে আওয়ামী লীগ থেকে ছেঁটে ফেলা হবে। এ বিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দলে হাইব্রিড-কাউয়াদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ জন্য খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।

দুষ্কৃতকারীরা দলের কেউ নয় তারা টাউট: অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন
বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ এবং দুষ্কৃতকারীরা দলের কেউ নয় বলে দাবি করেছেন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, যারা নিজেদের স্বার্থে হাসিলের জন্য দেশ ও দেশের মানুষের ক্ষতি করে। তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তারা সবাই টাউট-বাটপাড়। তিনি আরও বলেন, সৃষ্টিলগ্নে থেকেই আ.লীগ সবসময় অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। নিজ দলের কেউ অপরাধ করে, কোনো দিন পার পায়নি। অপরাধীদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ আ.লীগে নেই। আফজাল হোসেন বলেন, অনেকেই আ.লীগের নাম ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু দুষ্কৃতকারীদের সাথে আ.লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

ভার্চুয়ালি ভিন্ন পন্থিদের মনিটরিং হচ্ছে: সাখাওয়াত হোসেন শফিক
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফর করতে পারছেন না ক্ষমতাসীন আ.লীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। কিন্তু দলে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে তৃণমূলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক। তিনি বলেন, আ.লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। এই দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং ভিন্নপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এ দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সরকার ও দলের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের চিহ্নিত করে দল থেকে ছেঁটে ফেলা হবে।

সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আ.লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। শুদ্ধি অভিযানে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ছাড় দেননি তিনি। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন আগের কোনো সরকারপ্রধান করতে পারেনি। অতিতের কোনো সরকার তাদের এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়নি। শুধু বাংলাদেশ আ.লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে সকল ষড়যন্ত্রের মধ্যেও স্বাধীনতাবিরোধী ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে যাচ্ছেন। দলেও এর গতি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

আমারসংবাদ/এসটিএম