Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

যশোর-সৈয়দপুর-শাহমখদুম বিমানবন্দর রানওয়ে প্রকল্প: নিরাপদে বিমান ওঠা-নামা নিশ্চিত হবে

জাহাঙ্গীর আলম

অক্টোবর ১৮, ২০২০, ০৮:০২ পিএম


যশোর-সৈয়দপুর-শাহমখদুম বিমানবন্দর রানওয়ে প্রকল্প: নিরাপদে বিমান ওঠা-নামা নিশ্চিত হবে

যশোর, সৈয়দপুর এবং শাহমখদুম (রাজশাহী) বিমানবন্দর খুবই পুরাতন হওয়ায় এর রানওয়ের কার্পেটিংয়ের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে বহু আগে। কোথাও কোথাও গর্তও দেখা দিয়েছে।

তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে এই তিনটি বিমানবন্দরে নিরাপদ বিমান ওঠা-নামা নিশ্চিত করতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

একই সাথে প্রতিটি বিমানবন্দরের জন্য পর্যাপ্ত ধারণক্ষমতা-সম্পন্ন একটি করে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণী গাড়ি কেনা হবে। ৫৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের মধ্যে যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহী বিমানবন্দর অন্যতম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নির্মাণ করা যশোর বিমানবন্দর খুবই পুরাতন। এ বিমানবন্দরে গড়ে প্রতিদিন আট থেকে ৯টি বিমান ওঠা-নামা করে।

এ বিমানবন্দরে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ওভার রানসহ প্রায় আট হাজার ৬০০ ফুট এবং প্রস্থ সোল্ডারসহ ১৮০ ফুট। দীর্ঘদিনের হওয়ায় এর রানওয়ের বিটুমিনাস কার্পেটিংয়ের আয়ুষ্কাল অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

তারপরও বিমান চলাচল করায় রানওয়েতে বিভিন্ন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মাঝে মেরামত করে বিমান চলাচল উপযোগী করে রাখা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অবস্থাও একই।

বাণিজ্যের প্রসার ঘটায় এখানে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫টি বিমান ওঠা-নামা করে। প্রায় চার দশক আগে নির্মাণ করা এ বিমানবন্দরের রানওয়ে পেভমেন্ট বেশি লোড বহন করার উপযোগী নয়।

তাই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এর রানওয়ের। উপরের বিটুমিনাস সারফেস থেকে নুড়ি পাথর উঠে গর্তের সৃষ্টি  হয়েছে। সামরিকভাবে মেরামত ও রক্ষণা-বেক্ষণের মাধ্যমে বিমান চলাচল উপযোগী করে রাখা হচ্ছে।

 অপরদিকে, শাহমখদুম বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ছয় হাজার ৬০০ ফুট। সোল্ডারসহ প্রস্থ ১২০ ফুট। বর্তমানে দিনে চারটি বিমান ওঠা-নামা করছে। খুব শিগগিরই আরও বাড়বে।

কিন্তু রানওয়ের বিটুমিন কার্পেটিংয়ের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে। নুড়ি পাথর উঠে আসাসহ মাঝে মাঝে আস্তরণও উঠে যাচ্ছে। মেরামতের মাধ্যমে রানওয়েকে সচল রাখা হচ্ছে।

এসব অবস্থা বিবেচনা করে সিএএবি কমিটির মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। তারপরই তিনটি বিমানবন্দরে নিরাপদ বিমান ওঠা-নামা নিশ্চিত করার জন্য ‘যশোর, সৈয়দপুর এবং শাহমখদুম (রাজশাহী) বিমানবন্দর রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফপ্ট কংক্রিট অভারলেকরণ প্রকল্পটি তৈরি করে বেসামরিক বিমান পরিহবন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে।

এর প্রধান কাজ ধরা হয়েছে তিন বিমানবন্দরের রানওয়েতে ২৮০ মিমি, ২১০ ও ২৭০ মিমি পুরুত্বে অ্যাসফপ্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ তৈরি করা হবে। বিমানবন্দরের এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেমের আপগ্রেডেশন, রানওয়ের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং প্রতিটি বিমানবন্দরের জন্য পর্যাপ্ত ধারণক্ষমতা-সম্পন্ন একটি করে অগ্নিনির্বাপণী গাড়ি কেনা হবে।  

তা যাচাই করতে ২৮ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরামর্শক ব্যয় কমিয়ে রুয়েট, হাজী দানেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরামর্শক নিয়োগের জন্য সমঝোতা সই করতে বলা হয়।

সভায় তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, তিনটি জিপের পরিবর্তে একটি জিপ গাড়ি কেনাসহ আরও কিছু সিদ্ধান্ত মেনে সংশোধিত প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে বলা হয়।

এরপর সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) শামিমা নার্গিস প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছেন।

এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী মঙ্গলবার একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এতে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক আয়-ব্যয় বিবেচনায় প্রকল্পটি লাভজনক বলে সূত্র জানায়।

আমারসংবাদ/এসটিএম