Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

ডিসি সাবিনা ইয়াসমিনের মুন্সিয়ানা

জয়নুল ইসলাম, পঞ্চগড়

অক্টোবর ১০, ২০২০, ০৮:০২ পিএম


ডিসি সাবিনা ইয়াসমিনের মুন্সিয়ানা

হিমালয়ের কন্যা পর্যটনের শহর পঞ্চগড় জেলার পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। আটোয়ারী, বোদা, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া। এ জেলাটি দেশের সর্বউত্তরে ভারত সীমান্তে ঘেরা।

পঞ্চগড় জেলার মানুষের প্রধান পেশা হচ্ছে কৃষিকাজ, চাব-াগান, পাথর উত্তোলন। পঞ্চগড় জেলা প্রায় দুই বছর ধরে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে আসছেন, করোনাজয়ী, পিএইডি ডিগ্রিধারী, কবি, লেখক জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন।

তিনি পঞ্চগড় জেলায় দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই সর্বস্তরের লোকজনের সাথে মিশে সবার সহযোগিতায় পঞ্চগড় জেলাকে একটি ডিজিটাল মডেল জেলা হিসেবে তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসক দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পঞ্চগড় জেলার আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন হয়। তিনি পাঁচ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার ভূমি, ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাদের দিকনিদের্শনা দেন যাতে কোনো কৃষক বরা ভূমিমালিক হয়রানির শিকার না হয়। সরকারি সেবা জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছায়। কৃষক ও ভূমি মালিকদের হয়রানি রোধে তিনি অনলাইনে জমির খারিজের ব্যবস্থা করেন।

চিকিৎসাক্ষেত্রে তিনি সাবেক ছিটমহলবাসীসহ পঞ্চগড় জেলায় বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসা ক্যাম্প করে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেন। পঞ্চগড়ের দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হয়েছিল। তিনি নিজ উদ্যোগে প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধ করেন।

প্রকৃত পাথরশ্রমিক যাতে পাথর উত্তোলন করতে পারে ব্যবস্থা করেন। প্রাকৃতিক জমিতেই ঘরবাড়ি, দোকানপাট করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। সেই ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে দেয়া দিয়ে সরকারি সড়ক কেটে খাল বানিয়ে দখলে নিয়েছেন মজিদ আকন্দ। আর তাদের ব্যক্তিমালিকানা জমিতে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা নাটোরের আদালতে মামলা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুশমাইল গ্রামের ত্রিমোহনা নাছির মোড় থেকে সংগ্রামপুর, নাজিরপুরসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ রক্ষায় ষাটের দশকে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর স্থানীয় নাছির উদ্দিন ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সড়কটিতে মাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করেন। সে সময় তার নামেই ত্রিমোহনার মোড়ের নামকরণ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, মজিদ আকন্দের চাচা প্রয়াত ইউপি সদস্য নাছির উদ্দীনদের পৈতৃক ১১ শতাংশ সম্পত্তির ওপর দিয়েই সরকারি ওই সড়কটি বয়ে গেছে। এরপর সড়কটি হেরিংবন্ডও করা হয়। সাবেক ও হাল নকশাতেও সড়কটি আলাদা করে দাগ কেটে গেছে।

ওই সড়ক বয়েই সংগ্রামপুর, নাজিরপুরসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ চলাচলের পাশাপাশি তাদের জমিতে উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে নেয়াসহ উপজেলা-জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন।  

নাছির মোড় থেকে বয়ে যাওয়া ওই সড়কের বাম পাশজুড়ে ২০০ ফুটের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানা জমিতে সাবিনার বাড়ি-মুদি দোকান, আনোয়ারের মুদি দোকান, নাজিমের সাইকেল গ্যারেজ, রমজান আলীর ফার্মেসি, নজরুল ইসলামের মুদি দোকান ছিলো। কিন্তু মজিদ আকন্দ সড়কের ওই ১১ শতাংশ জামি দখলে নিতে অনেক দিন ধরেই প্রক্রিয়া চালাচ্ছিলেন।

সর্বশেষ গত ১৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই এস্কেভেটর দিয়ে সড়কের বাম পাশের ওই ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। অস্ত্র হাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ভয় দেখিয়েছেন মাজেদ, জহুর আলী, দিলবর, এন্তাজসহ মজিদ আকন্দের ১০ জনের বাহিনী। এ কারণে মুখ খুলতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।

তবে মজিদ আকন্দ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের জমির ওপর দিয়ে সড়ক ছিলো। তিনি ১১ শতাংশ জমি দখলে নিতে সড়কে বেড়া দিয়েছিলেন। এ কারণে স্থানীয়রা পাশ দিয়ে নতুন করে সড়ক নির্মাণ করেছেন। জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন তবে ঘটনাস্থলে যাননি।

বড়াইগ্রামের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাইমেনা শারমিন বলেন, ভুক্তভোগীদের ঘরবাড়ি, দোকান সরকারি খাস জমিতে ছিলো। উচ্ছেদের জন্য কেস নথিভুক্ত করে পাঠানো হয়েছে। এখনো নির্দেশনা আসেনি। কারা উচ্ছেদ করেছে তিনি তা জানেন না। তবে সড়ক কোথায় ছিলো, কোথায় আছে সেটাও তিনি জানেন না।

আামরসংবাদ/এসটিএম