মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
মার্চ ৩১, ২০২০, ১১:২০ এএম
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে “করোনা ভাইরাস রোগে আক্রান্ত এক নারী ঢাকার করোনা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে মির্জাগঞ্জের পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে এসেছেন” এমন একটি স্ট্যাটাস সোমবার রাত ৮টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। যা পরবর্তীতে উপজেলা ছাপিয়ে জেলা শহর পটুয়াখালীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে আসা গৃহিণী শাহিদা বেগম (৪২) করোনা ভাইরাস নয়, টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেছেন মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা.দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা।
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “করোনা ভাইরাস রোগে আক্রান্ত এক নারী ঢাকার করোনা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে মির্জাগঞ্জের পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে এসেছেন” এমন একটি স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি এলাকায় ভাইরাল হয় এবং মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, মির্জাগঞ্জ থানা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানালে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে থানা পুলিশের একটি টিম রাতে ঐ বাড়িতে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেন এবং ৬ সদস্যের ঐ পরিবারের লোকজনকে ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেন ।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প.প. কর্মকর্তা ডা.দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহভাজন শাহিদা বেগমের চিকিৎসাজনিত সকল কাগজপত্র নিয়ে হাসপাতালে ডেকে পাঠান ।
২৬ মার্চ লৌহজং উপজেলার স্থানীয় চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রিপোর্ট দেখে তিনি জানান, শাহিদা বেগম করোনা ভাইরাস রোগে নয়, তিনি টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত। করোনা ভাইরাস রোগে আক্রান্ত বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
অধিকতর নিরাপত্তার স্বার্থে ও তার শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন উপস্বর্গ আছে কিনা তা যাচাই ও পর্যবেক্ষন করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সরোয়ার হোসেন মঙ্গলবার বেলা ১২টায় উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে শাহিদা বেগমের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং তার শারিরীক অসুস্থতার খোঁজ খবর নেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প.প. কর্মকর্তা ডা.দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা জানান, লৌহজং থেকে আসা ঐ নারীর চিকিৎসার সকল কাগজপত্র দেখেছি এবং বাড়িতে গিয়ে তার বর্তমান শারিরীক অবস্থা পর্যবেক্ষন করেছি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের পূর্বে জ্বর,গলা ব্যাথা,মাথা ব্যাথা,সর্দি হওয়ার কোন উপস্বর্গ তার শরীরে পাওয়া যায়নি। তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শাহিদা বেগম করোনা ভাইরাস রোগে আক্রান্ত নন, টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত এবং তিনি চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে ডা.দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা জানান।
শাহিদা বেগমের স্বামী মো.সালাম খাঁন জানান, তিনি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলা সদরের একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্বে আছি। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মসজিদে মুসুল্লিদের উপস্থিতি কম থাকায় এক ছেলে ও স্ত্রী শাহিদা বেগমকে নিয়ে সোমবার (৩০মার্চ) বিকালে মির্জাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে শ্বশুর মো. শাহজাহান হাওলাদারের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। আমার স্ত্রী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয় এবং কোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীনও ছিলেন না, স্থানীয় চিকিৎসকের দেয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তার ঔষধ সেবন চলছে।
আমারসংবাদ/এমআর